দলবদলের খেলায় নজিরবিহীন ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের রায়নায়

10th February 2020 বর্ধমান
দলবদলের খেলায় নজিরবিহীন ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের রায়নায়



রাজনৈতিক বদলের খেলায় দেশের তাবড়  নেতাদের  হারমানালেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার নড়ুগ্রাম অঞ্চলের  বিজেপি কর্মীরা । তাঁরা নিজের দলের  নেতাদের  বিরুদ্ধে ধোঁকা দেবার অভিযোগ এনে গত বৃহস্পতিবার  যোগ দিয়েছিলেন  তৃণমূল শিবিরে। এর পর ৪৮ ঘন্টা কাটতে না কাটতে ফের পাল্টি মেরে গেরুয়া শিবিরেই ফিরলেন নাড়ুগ্রাম অঞ্চলের শতাধীক বিজেপি কর্মী।এই ঘটনা জানাজানি হতেই রাজনীতিকদের নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপের জোয়ার বইছে সমগ্র রায়না জুড়ে  । সবারই একটাই বক্তব্য, রাজনৈতিক রঙ বদলে গিরগিটিকেও  টেক্কা দিল নাড়ুগ্রামের বিজেপি কর্মীরা । 


 রায়নার হিজলনায় রয়েছে  তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইয়ের কার্যালয়।নাড়ুগ্রাম অঞ্চল বিজেপির বুথ সভাপতি কার্তিক সাঁতরা সহ   শতাধীক বিজেপি কর্মী হঠাৎতই গত  বৃহস্পতিবার  তৃণমূল বিধায়কের অফিসে পৌছেযান। সেখানে সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁরা  তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগদান করেন । বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই তাঁদের হাতে তৃণমূলের দলীয় পতাকা তুলেদিয়ে দলে বরণ করেনেন ।  


 তৃণমূলের ঝান্ডা কাঁধে তুলে নিয়ে ওইদিন কার্তিক সাঁতরা ও অপর বিজেপি কর্মী তুষার সিং বলেন , “বিজেপি নেতারা আমাদের ধোঁকা দিয়েছে । লোকসভা  ভোটের আগে বিজেপি নেতারা  এলাকার ক্লাব সহ নাড়ুগ্রাম অঞ্চলের  উন্নয়ন ঘটানোর উদ্যোগ নেবেন বলে তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই কথা বিশ্বাস করে  লোকসভা ভোটের সময়ে তাঁরা বিজেপির ঝান্ডা কাঁধে তুলেনিয়ে ভোট যুদ্ধে  সামিল হয়েছিলেন । পরবর্তি সময়ে তাঁরা বুঝতে পারেন নাড়ুগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়ন ঘটানোর ব্যাপাবে  বিজেপি নেতাদের কোন সদিচ্ছাই নেই । তাই নড়ুগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে তাঁরা বিজেপি  ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলেন ।” শতাধীক বিজেপি কর্মীকে ওই দিন তৃণমূলে যোগদান করাতে পেরে বেজায় উৎফুল্ল হয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই ।সেদিন বিধায়ক  তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন , ‘বিজেপি নেতারা যে ধোঁকাবাজ তা নাড়ুগ্রাম অঞ্চলের মানুষজন ভালোভাবেই বুঝেগেছেন ।তাই বিজেপির প্রতি তাঁদের  মোহভঙ্গ হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী রায়না সহ সারা রাজ্যে বহু উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলেছে। নাড়ুগ্রামের ক্লাব সহ অঞ্চলের উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানকারীরা ।বিধায়ক ওই দিন জানিয়েদেন  নড়ুগ্রামের উন্নয়ন কাজে  যেটুকু খামতি রয়েছে তা পূরণ করার জন্য তিনি সর্বত ভাবে উদ্যোগ নেবেন । ’
এই ঘটনার পর  ৪৮ ঘন্টা কাটতে না কাটতে শনিবার ফের চিত্র নাট্যের বদল ঘটেগেল।  বিজেপি নেতাদের আহ্বানে শনিবার বিকালে  ফের আবার গেরুয়া শিবিরে  যোগদিলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া নড়ুগ্রাম অঞ্চলের ওই সকল বিজেপি নেতা ও কর্মীরা। বৃহস্পতিবার তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইয়ের কার্যালয়ে যাওয়া কার্তিক সাঁতরা সহ  শাতধীক জনের হাতে  এদিন বিজেপির দলীয় পতাকা তুলেদেন রায়নার বিজেপি পর্যবেক্ষক বিজন মণ্ডল । এদিন আবার কার্তিক সাঁতরা বলেন , নাড়ুগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নের দাবি নিয়ে গ্রামের মানুষজনের সঙ্গে তিনিও নেপাল ঘোড়ুইয়ের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন ।  সেখানে চাপসৃষ্টি করে  তাঁদের তৃণমূলের ঝান্ডা কাঁধে তুলে নিতে  বাধ্য করা হয়েছিল। একই শুরে বিজন মণ্ডল বলেন , উন্নয়ন কাজের দাবি জানাতে যাওয়া বিজেপি কার্যকর্তা ও কর্মীদের ভয় দেখিয়ে নেপাল ঘোড়ুই বিজেপি কর্মীদের তৃণমূলের ঝান্ডা কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য করেছিলেন । তাঁরা কেউ মনেপ্রাণে তৃণমূলে যায়নি ।এদিন থেকে তাঁরা আবার বিজেপির ঝান্ডা কাঁধে তুলে নিয়ে তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ে নেমে পড়েছে । কারণ তারা সকলেই বুঝে গেছে তৃণমূলই আশল ধোঁকাবাজ । বিজেপি কর্মীদের এই পাল্টি খাওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূল  বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই বলেন , কাউকেই ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগদান করানো হয়নি ।আশলে বঙ্গ বিজেপিতে এখন গিরগিটি রুপিদেরই বাড়বাড়ন্ত ঘটেছে । নাড়ুগ্রামের বিজেপি কর্মীরাও সেই গোত্রেরই । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।